রপ্তানি খাত বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের প্রধান উৎস। তৈরি পোশাক শিল্প, যা দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই যোগান দেয়, আন্তর্জাতিক বাজারে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডকে গর্বের প্রতীকে পরিণত করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, ওষুধ, জাহাজ, আইটি খাতসহ অন্যান্য সেক্টরের উন্নয়ন। নতুন বাজার খোঁজা, উৎপাদনের মানোন্নয়ন এবং পণ্যের বহুমুখীকরণ—এই তিনটি কৌশল বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতাকে আরও প্রসারিত করছে।
শিল্প খাতে বাংলাদেশ এখন একটি রূপান্তরের পথে। কেবল পোশাক শিল্প নয়, নানা ধরনের হালকা প্রকৌশল, প্লাস্টিক, ফার্মাসিউটিক্যাল, সিরামিকস এবং ইলেকট্রনিকস শিল্পের বিকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক অঞ্চল (Economic Zones) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্পায়নের পথ উন্মুক্ত করেছে। এসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ, পরিবহন, ও প্রযুক্তি সুবিধা নিশ্চিত করে বিদেশি এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে।
বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন গতি এনেছে। একদিকে বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) যেমন শিল্পায়নের জন্য মূলধন ও প্রযুক্তি এনেছে, অন্যদিকে দেশীয় উদ্যোক্তাদের হাত ধরেও বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’ সূচকে উন্নতির চেষ্টা এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার ফলে বাংলাদেশ ব্যবসার উপযোগী গন্তব্য হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে।
এই উন্নয়ন শুধু পরিসংখ্যানেই সীমাবদ্ধ নয়; এর বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে, শহর ও গ্রামে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। ভবিষ্যতের লক্ষ্য হলো—রপ্তানির বহুমুখীকরণ, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, শিল্পের আধুনিকায়ন এবং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন।
বাংলাদেশ যদি এই অগ্রগতি ধরে রাখতে পারে, তবে “উন্নয়নশীল দেশ” থেকে “উন্নত অর্থনীতির” দেশের কাতারে পৌঁছানো শুধুই সময়ের ব্যাপার।
0 মন্তব্যসমূহ
আশা করি আপনারা সবাই ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করবেন আমার ব্যক্তিগত মতামত আপনার ভালো না লাগলে এড়িয়ে চলুন।
ধন্যবাদ