গত কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েল নিয়মিতভাবে গাজা, পশ্চিম তীর এবং সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে আসছে। এর জবাবে ইরানও আঞ্চলিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের আলামত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর সেই মুহূর্তেই যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যেই ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নেয়। ইরানে সরাসরি হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আসলে ইসরায়েলের পক্ষেই সামরিক সমর্থনের ঘোষণা দিলো।
বিশ্ব রাজনীতি আজ দ্বিধাবিভক্ত। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই নিজেকে ‘গণতন্ত্রের অভিভাবক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে এসেছে। কিন্তু বাস্তবে তারা বিশ্বের নানা প্রান্তে যুদ্ধ বাধিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ভার কাঁধে তুলে নিয়েছে। ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে—এটা আজ আর কোনো নতুন খবর নয়। শিশুদের হত্যা, হাসপাতালে হামলা, সাংবাদিকদের উপর গুলি—এসবই ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়মিত কাজ। অথচ এইসব বর্বরতা উপেক্ষা করেই যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ইসরায়েলকে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, যখন ইরান প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে, তখন যুক্তরাষ্ট্র সেটাকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যায়িত করে। গণতন্ত্রের নাটক আর মানবাধিকারের মুখোশ পরে যুক্তরাষ্ট্র আসলে ইসরায়েলের যুদ্ধনীতি বাস্তবায়নের বড় পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হয়েছে। ইরানে হামলা করে তারা প্রমাণ করেছে—যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মানবাধিকার নয়, বরং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থই মুখ্য।
এই আক্রমণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইরান নয়—পুরো বিশ্বকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ইরান একা নয়, তাদের পাশে রয়েছে রাশিয়া, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু প্রতিরোধমূলক শক্তি। ফলে এ সংঘাত যে কোনো মুহূর্তে বৈশ্বিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে। এখন সময় এসেছে—বিশ্ববাসীকে এই যুদ্ধবাজ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।
গণতন্ত্রের নামে এই যুদ্ধনীতি আর মানবাধিকারের ভণ্ডামি বন্ধ করতে না পারলে সামনে পৃথিবীকে আরও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মতামত আমাকে নতুুন নতুন আপডেট দিতে উৎসাহিত করবে।
ধন্যবাদ