হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশুর কান্না বিশ্বের কিছু যায় আসে না, এক ইসরায়েলি নাগরিক আহত হলেই সভ্যতা বিপন্ন!

গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা শত শত শিশুর কান্না আজ আর কারো কানে পৌঁছে না। দিনের পর দিন ইসরায়েলি বাহিনী গাজার নিরপরাধ শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষদের ওপর নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করছে। স্কুল, মসজিদ, বাজার এমনকি হাসপাতাল পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না ইসরায়েলের নিষ্ঠুর আগ্রাসন থেকে। হাসপাতাল মানেই যেখানে আশ্রয়, নিরাপত্তা, আর্তমানবতার শেষ ঠিকানা — সেই স্থানেই নির্দ্বিধায় বোমা নিক্ষেপ করছে ইসরায়েলি বাহিনী।

গাজার সবগুলো হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়ে সহস্রাধিক অসহায় রোগী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। অথচ এই ভয়াবহ বর্বরতার পরও আন্তর্জাতিক মহল ছিল সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। কোনো মানবাধিকার সংগঠন, কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, কোনো রাষ্ট্রপ্রধান— কেউই গাজার নিহত শিশুদের জন্য ন্যূনতম মানবিক প্রতিক্রিয়া পর্যন্ত দেখায়নি। যেন গাজার মানুষের জীবন মূল্যহীন।

কিন্তু ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভুলক্রমে ইসরায়েলের একটি হাসপাতালে পড়তেই গোটা বিশ্বের বিবেক গর্জে উঠলো। মাত্র কয়েকজন হতাহতের ঘটনায় পৃথিবীর সব বড় বড় মিডিয়া এটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে চিৎকার শুরু করলো। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রভাবশালী সব রাষ্ট্র একে একে বিবৃতি দিতে শুরু করলো। যেন মানবতার সব ভার শুধু ইসরায়েলের ওপরই নির্ভর করছে।

গাজার শিশুদের নির্বিচারে হত্যার ঘটনায় কেউ প্রশ্ন তোলে না। ইসরায়েলের হাসপাতাল আঘাত পেতেই সবাই মানবতা খুঁজে পায়। ফিলিস্তিনের শিশুদের রক্তের কোনো মূল্য নেই, তাদের কান্নার কোনো শব্দ নেই, তাদের জীবন যেন জন্ম থেকেই অপরাধী।

ইসরায়েলি বাহিনী বলে তারা আত্মরক্ষার্থে হামলা চালাচ্ছে। যদি আত্মরক্ষার প্রয়োজন হয়, তাহলে কেন শিশুদের উপর বোমা বর্ষণ? কেন হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে? এই আত্মরক্ষার নামে যেসব বর্বরতা চলছে তা কি আসলে আত্মরক্ষা, নাকি পরিকল্পিত গণহত্যা?

একটা ফিলিস্তিনি শিশুর কান্না বিশ্বের কিছু যায় আসে না। কিন্তু এক ইসরায়েলি নাগরিক আহত হলেই সভ্যতা বিপন্ন, মানবতা বিপন্ন, গোটা পৃথিবী অস্থির হয়ে ওঠে। এই দ্বিমুখী মানবতা আজ মানবতাকেই লজ্জিত করে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ