বন্যার আগে সতর্কতা: সময় থাকতে সচেতন হওয়া অতি জরুরী আপনার করণীয় কি তা জেনে নিন

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যা অন্যতম বিপজ্জনক একটি ঘটনা। প্রতি বছরই বাংলাদেশের বহু এলাকা বন্যাকবলিত হয়, আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদি পশু এমনকি অনেক সময় প্রাণহানিও ঘটে। অথচ একটু আগে থেকে সতর্ক হলে এই ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। বন্যা আসার আগেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনি ও আপনার পরিবার নিরাপদ থাকতে পারেন।

প্রথমেই জানতে হবে, আপনার এলাকা বন্যাপ্রবণ কি না। স্থানীয় প্রশাসন কিংবা আবহাওয়া অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিয়মিত খোঁজ রাখুন বন্যার পূর্বাভাস সম্পর্কে। বর্তমানে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ, ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগাম সতর্কতা পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করে প্রস্তুত থাকা যায় অনেক আগেই।

বন্যার আগে বাড়ির গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, পরিচয়পত্র, দলিল, সার্টিফিকেট ইত্যাদি জলরোধী ব্যাগে রেখে এমন জায়গায় রাখতে হবে যেটা সহজে পানিতে ডুবে যাবে না। বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি, প্লাগ, এবং সুইচগুলো নিরাপদভাবে রাখুন এবং পানি ঢোকার আশঙ্কা থাকলে মেইন সুইচ বন্ধ রাখুন।

পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে একটি ‘জরুরি ব্যাগ’। এই ব্যাগে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানির বোতল, প্রয়োজনীয় ওষুধ, ফার্স্ট এইড কিট, টর্চলাইট, পাওয়ার ব্যাংক, ব্যাটারি, মাস্ক, স্যানিটারি সামগ্রী এবং কিছু নগদ টাকা রাখা উচিত। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থদের জন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে।

বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র বা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার রুট আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখুন। আপনার এলাকা থেকে কোন পথে বের হওয়া সহজ হবে, কোন স্কুল বা সরকারি ভবন আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়—তা আগেই জেনে রাখুন। পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখুন, যাতে কেউ বিপদে পড়লে সাহায্য করা যায় বা একসাথে নিরাপদ স্থানে যাওয়া যায়।

পশু-পাখিদের সুরক্ষার বিষয়টিও অবহেলা করা যাবে না। গবাদিপশু রাখার স্থান উঁচু করতে হবে অথবা তাদেরও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকা। সময়মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রশাসনের নির্দেশনা মানা এবং পরিবারকে প্রস্তুত রাখার মাধ্যমেই আপনি ও আপনার প্রিয়জনরা বন্যার বিপদ থেকে অনেকটাই নিরাপদ থাকতে পারবেন।

আজই প্রস্তুতি নিন—কারণ দুর্যোগ কখনো বলে আসে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ