একজন সচেতন নাগরিকের ভাবনা কি হতে পারে | Voice of Ashfaque


আমি কেবল একজন সাধারণ মানুষ, তবে আমি মনে করি, প্রতিটি সাধারণ মানুষের মাঝে লুকিয়ে থাকে অসাধারণ কিছু করার ক্ষমতা— যদি সে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়। আজ আমি কিছু ভাবনা শেয়ার করতে চাই, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যা আমার মনে জাগে।

আমরা প্রায়ই রাষ্ট্রকে দোষারোপ করি— সরকার ঠিক কাজ করছে না, আইন মানা হচ্ছে না, অন্যায়-অবিচার বাড়ছে। কিন্তু একটু থেমে ভেবে দেখি কি, আমরা নিজেরা কতটুকু দায়িত্ব পালন করছি? নাগরিক হিসেবে আমাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই? রাস্তার পাশে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে দিই, ট্রাফিক আইন অমান্য করি, ঘুষ দেওয়ার সুযোগ খুঁজি, অথচ রাষ্ট্রকে দোষ দিয়ে কাঁধ ঝেড়ে ফেলি। এটি কি সচেতনতা?

ভোট আসে, আমরা নিঃস্পৃহ থাকি। রাজনৈতিক দুর্নীতির কথা বলি, কিন্তু ভোট দিতে যাই না। আবার কেউ কেউ অন্ধ আবেগে এমন প্রার্থীকে ভোট দিই যার চিন্তা-চেতনা, নীতি বা যোগ্যতার সাথে আমাদের মূল্যবোধের মিল নেই। সচেতন নাগরিকের কাজ হলো যাচাই-বাছাই করে, তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া— আবেগ দিয়ে নয়।

আমরা চাই উন্নত বাংলাদেশ, নিরাপদ সমাজ। কিন্তু রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে যদি কোনো শিশু রাস্তায় কাঁদে, আমরা পাশ কাটিয়ে যাই। যদি দেখি কেউ অসহায়ভাবে দুর্ঘটনায় পড়েছে, অনেকেই দাঁড়াই না। আমরা যদি একে অপরের পাশে না দাঁড়াই, তাহলে সমাজ কখনই মানবিক হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া এখন আমাদের জীবনের একটি বিশাল অংশ। এখানে আমরা মতামত প্রকাশ করি, খবর শেয়ার করি। কিন্তু আমরা কি সত্যতা যাচাই করি? একজন সচেতন নাগরিক কখনই গুজব ছড়ায় না। সে জানে, একটি ভুয়া খবর হতে পারে হাজার মানুষের ক্ষতির কারণ।

পরিবেশ নিয়ে আমাদের দায়বদ্ধতা নিয়েও আমাদের ভাবা দরকার। প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতনতা, গাছ লাগানো, শব্দ দূষণ রোধ— এসব আমাদেরই দায়িত্ব। আমরা যদি প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি দায়িত্ববান না হই, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদেরকে ক্ষমা করবে না।

সবশেষে বলি, দেশ গড়ার কাজ সরকার একা করতে পারে না। এ দায়িত্ব আমাদের সবার। নিজের অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করা, অন্যের অধিকারকে সম্মান করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা— এগুলোই একজন সচেতন নাগরিকের প্রকৃত পরিচয়।

আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন আমাদের দেশে সবাই সচেতন হবে। তখন গড়ে উঠবে এক সত্যিকারের মানবিক, উন্নত ও মর্যাদাশীল বাংলাদেশ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ