বাংলাদেশে চাঁদাবাজি ও লুটতরাজ একটি দীর্ঘদিনের সামাজিক ব্যাধি হিসেবে রূপ নিয়েছে, যার পেছনে রাজনৈতিক দলের কিছু নেতাকর্মীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, এমনকি মাঝারি স্তরের উদ্যোগেও চাঁদা তোলা ও লুটপাটের অভিযোগ শোনা যায়। এতে একদিকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি ও ন্যায়বিচার ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর হাইকমান্ডকেই প্রথমে সচেতন হতে হবে এবং বাস্তবিক ও কার্যকর নির্দেশনা দিতে হবে। শুধু মুখে নীতিকথা বললে হবে না; দলের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। দলের যেসব নেতাকর্মী চাঁদাবাজি ও লুটপাটের সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের ইমেজ রক্ষার স্বার্থেই এসব দুর্নীতিবাজ ও অপকর্মে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। একইসাথে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দলীয় ফোরামের মাধ্যমে অভিযোগ শোনার ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে সাধারণ জনগণ নির্ভয়ে অভিযোগ করতে পারে। তাছাড়া গণমাধ্যমে স্বচ্ছভাবে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করে বলতে হবে যে, চাঁদাবাজি ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের কোনো ধরনের রক্ষা নেই।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নতুন প্রজন্মের মধ্যে সততা, মানবিকতা ও নৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে বিনিয়োগ করা। কারণ যখন নেতৃত্বে সৎ ও জবাবদিহিতামূলক মানুষ আসবে, তখন দলীয় স্বার্থ নয়, জনগণের স্বার্থই মুখ্য হয়ে উঠবে। এভাবেই দলগুলোর হাইকমান্ডের সক্রিয় ভূমিকা এবং কঠোর নীতিগত অবস্থানই চাঁদাবাজি ও লুটতরাজ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
আপনার মূল্যবান মতামত আমাকে নতুুন নতুন আপডেট দিতে উৎসাহিত করবে।
ধন্যবাদ