শৈশব—এই শব্দটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক অপার আনন্দ, এক নিঃশর্ত ভালোলাগা। জীবনের সেই অধ্যায় যেখানে দায়িত্ব ছিল না, ছিল না কোনো ভয় কিংবা চিন্তা। ছিল শুধু খেলা, হাসি, ছুটে চলা আর ছোট ছোট আবদার।
আমার শৈশব কেটেছে এক মফস্বল শহরের কোলে, যেখানে এখনো দুপুরবেলা বাতাসে ধানক্ষেতের গন্ধ ভেসে আসে। সকালবেলায় বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়া, স্কুল ছুটির পর খালি পায়ে বাড়ি ফেরা, আর বিকেলে কাঁচা রাস্তার ধুলো মেখে খেলার মাঠে দৌড়ে বেড়ানো—সব মিলিয়ে ছিল এক রঙিন সময়। স্কুলব্যাগে বইয়ের চেয়ে মার্বেল আর পাতা জমিয়ে রাখা খেলনার গুরুত্ব ছিল বেশি।
বৃষ্টির দিনে চালার টিনে টিনে যে শব্দ বাজতো, তা যেন ছিল মনের ভেতরে এক অজানা সংগীত। মা তখন গরম খিচুড়ি আর ভাজা ডিম দিয়ে ডাক দিতেন। সেই খাওয়া, সেই আমেজ—আজকের দিনে প্রাপ্তির বহু চেষ্টা করেও আর পাওয়া যায় না।
বন্ধুদের সঙ্গে পুকুরে লাফিয়ে স্নান, গাছে চড়া, আম কুড়ানো কিংবা সন্ধ্যার পর দাদার মুখে ভূতের গল্প—সবকিছু মিলিয়ে জীবনটা তখন কত সহজ ছিল। অল্পতেই হাসি, সামান্যতে কান্না, আবার পরক্ষণেই মিল হয়ে যেত সব কিছু।
আজ বড় হয়ে বুঝি, শৈশব শুধু একটা সময় নয়, এটা এক ধরনের অনুভব। যা হারিয়ে গেলেও থেকে যায় মনের গহিনে। মাঝে মাঝে হঠাৎ কোনো পুরোনো ছবি, গানের সুর কিংবা বৃষ্টির শব্দ শুনলেই মনটা ছুটে যায় সেই হারানো দিনগুলোতে। তখন মনে হয়, যদি আরেকবার ফিরে যেতে পারতাম সেই দিনে—যেখানে জীবনের মানে ছিল শুধু আনন্দ আর ভালোবাসা।
শৈশব আর ফিরে আসে না, তবে স্মৃতির পাতায় সে রয়ে যায় চিরসবুজ হয়ে।
0 মন্তব্যসমূহ
আশা করি আপনারা সবাই ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করবেন আমার ব্যক্তিগত মতামত আপনার ভালো না লাগলে এড়িয়ে চলুন।
ধন্যবাদ